বার্তাকক্ষঃ
স্থানীয় নির্বাচনে এবার চাইলেই যে কেউ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম কিনতে পারবেন না। দলের সমর্থনের বাইরে কেউ যেনো নির্বাচনে অংশ নিতে না পারে সেজন্য বিকল্প পন্থা অবলম্বন করা হয়েছে।
দলীয় ম্যান্ডেট নিতে হলে প্রার্থীর নাম থাকতে হবে জেলা, উপজেলা এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষরিত রেজুলেশনে।
আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা জানিয়েছেন, দলের গঠনতন্ত্রে এভাবেই মনোনয়ন ফরম বিতরণের বিধান রয়েছে। অতীতে এই বিধান কার্যকর করা হয়নি। এবার বিষয়টি নিয়ে বেশ কড়কড়ি আরোপ করা হয়েছে। দলের সভাপতি শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে প্রেসিডিয়ামের বৈঠকের পরদিনই এ উদ্যোগ নিয়েছে দলটি।
আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, দলের গঠনতন্ত্রে যে বিধান রয়েছে, আমরা সে অনুযায়ী মনোনয়ন ফরম বিক্রি করবো। ইউনিয়ন পরিষদে মনোনয়ন পেতে জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সমন্বিত স্বাক্ষরে যেসব মনোনয়ন প্রার্থীর নাম থাকবে তারাই ফরম কিনতে পারবেন।
তিনি বলেন, এ বিষয়ে দলের গঠনতন্ত্রের ২৬(৩) ধারায় স্পষ্ট নির্দেশনা দেয়া আছে।
ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ের সামনে একটি নোটিশে বলা হয়েছে, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে জেলা, উপজেলা এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষরিত রেজ্যুলেশনে প্রার্থীর নাম ছাড়া নমিনেশন ফরম বিক্রি হয় না। অর্থাৎ জেলা, উপজেলা এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ থেকে এসব মনোনয়ন প্রত্যাশীদের নামের তালিকা পাঠানো হবে তারাই কেবল মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করতে পারবে। আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে অন্তত তিন জনের নামের তালিকা কেন্দ্রীয় মনোনয়ন বোর্ডের কাছে পাঠানো যাবে।
এদিকে স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন নির্বাচনসহ সাংগঠনিক কার্যক্রম জোরদারের লক্ষ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এরই মধ্যে দেশব্যাপী দলের অপূর্ণাঙ্গ কমিটিগুলো পূর্ণাঙ্গ করার উদ্যোগ নিয়েছে। প্রথম পর্যায়ে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয়া হয়েছিলো। পরে তা আবার এক সপ্তাহ বাড়ানো হয়।
১৬ সেপ্টেম্বর থেকে তফসিল ঘোষিত জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদে দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে ফরম বিতরণ ও সংগ্রহ শুরু করেছে আওয়ামী লীগ। দলীয় সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে থেকে ফরম দেয়া হচ্ছে। চলবে আগামী ২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।
নির্বাচন কমিশন (ইসি) সূত্রে জানা গেছে, আগামী বছরের মার্চ থেকে কয়েক ধাপে শুরু হচ্ছে ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন। স্থানীয় সরকারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও বড় পরিধির ৪ হাজার ১০০টি ইউপি’র নির্বাচন আয়োজনে ইতিমধ্যে প্রাথমিক প্রস্তুতিও শুরু করেছে ইসি। ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে ইসি এই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে পারে।
আইন অনুযায়ী, আগামী বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই সব ইউপি নির্বাচন সম্পন্ন করতে চায় ইসি।
এর আগে আগামী অক্টোবরে মামলার জটে আটকে থাকা দুই শতাধিক ইউপিতে উপনির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে।
বর্তমানে দেশে ৪ হাজার ৫৭১টি ইউনিয়ন পরিষদ রয়েছে। ২০১৬ সালের ২২ মার্চ শুরু হয়ে কয়েক ধাপে ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন শেষ হয় ওই বছরের ৪ জুন।
আইন অনুযায়ী, কোনো ইউনিয়ন পরিষদের মেয়াদ শেষ হওয়ার পূর্ববর্তী ১৮০ দিনের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে।
0 Comments