স্টাফ রিপোর্টারঃ
সুজানগর উপজেলার হাটখালী ইউনিয়নে হতদরিদ্রের রেশন কার্ডের দশ টাকা কেজি চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ইউনিয়নের তালিকাভুক্ত এক হাজার কার্ডের মধ্যে ২৬৫টি ভুয়া কার্ড এবং ৩শ’ জনই জানেন না তাদের নামে ন্যায্য মূল্যের কার্ড রয়েছে। এ নিয়ে বিক্ষোভসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা অভিযোগ তুলেছেন।
হাটখালী ইউনিয়ন হতদরিদ্র পরিবারের মাঝে সরকার ঘোষিত খাদ্য সহায়তা কার্ডের দশ টাকা কেজি চাল প্রকল্পের এক হাজার কার্ডের তালিকা বিদ্যমান। এই তালিকাটি হাটখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ হাবিবুর রহমান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনুমোদিত। এ তালিকায় প্রায় সাড়ে ৫শত কার্ডে অনিয়ম, দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল চাল আত্মসাত করা হয়েছে। আর এর সঙ্গে হাটখালী ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ হাবিবুর রহমান, চেয়ারম্যানের পুত্র ডিলার সাইফুল ইসলাম, ঘনিষ্ঠ আত্মীয় মোঃ আব্দুস শুকুর, ইউপি সদস্য আকাশ মোল্লাসহ আরও কয়েকজন ইউপি সদস্যের সম্পৃক্ততার অভিযোগে রয়েছে।
দুর্নীতি প্রতিরোধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনাভাইরাসে কর্মহীন জনগণের খাদ্য সহায়তা প্রকল্পে ত্রাণ কমিটি গঠনের মাধ্যমে নতুন তালিকা করার নির্দেশ প্রদান করেন। নতুন ত্রাণ কমিটির মাধ্যমে তালিকা করতে গিয়ে পূর্বের তালিকার চালবাজি ও জালিয়াতি ধরা পড়ে। অনুসন্ধানে জানা যায়, ২নং ওয়ার্ডে তালিকার ক্রমিক নং ২০১ হতে ২৭৫ মোট ৭৫ জন কার্ডধারী, ৩নং ওয়ার্ডে ৩৭৬ হতে ৪০০ জন মোট ২৫ জন, ৪নং ওয়ার্ডে ৫০ জন, ৬নং ওয়ার্ডে ৯০ জন, ৮নং ওয়ার্ডে ২৫ জন। ইউনিয়নে এক হাজার কার্ডের মধ্যে ২৬৫ জনের নামে ভুয়া কার্ড করে তাদের নামে দীর্ঘদিন ধরে চাল আত্মসাত করা হয়েছে। কার্ড অন্তর্ভুক্ত ৩০০ লোকই জানেন না তাদের নামে কার্ড রয়েছে। তাছাড়া কোন মাসে ত্রিশ কেজি চালের পরিবর্তে এক কেজি দিয়ে কার্ডে ৩০ কেজি লেখে এইসব ভুক্তভোগীদের কার্ডের চাল চেয়ারম্যান, মেম্বার ও ডিলারগণ যোগসাজশে দীর্ঘদিন ধরে আত্মসাত করা হচ্ছে। গত ২৭ এপ্রিল এসব বঞ্চিত জনগণ হাটখালী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে মানববন্ধন করলে দুর্নীতি ও আত্মসাতের বিষয়টি দৃষ্টিগোচর হয়। এরপর দিন চেয়ারম্যান মোঃ হাবিবুর রহমান ফেসবুক পেজে জানান, কিছু কার্ড পরিবর্তন করা হয়েছিল সেগুলো তাদের দেয়া হয়েছে কিনা তার জানা নেই। তার বক্তব্যেই প্রমাণিত হয় যে, পূর্বে যাদের নামে কার্ড ছিল তা বাতিল করা হয়েছে এবং নতুন যাদের নামে কার্ড করা হয়েছে তাদের জানানো বা প্রদান করা হয় না। এভাবেই প্রতারণার মাধ্যমে হতদরিদ্রের চাল চেয়ারম্যান ডিলারদের সঙ্গে যৌথভাবে বছরের পর বছর আত্মসাত করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি আঃ রশিদ, ১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সেক্রেটারি রাজ কুমার সরকার পৃথকভাবে পাবনা জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলা দুর্নীতি দমন কমিশনের কাছে অভিযোগ করেছেন। যদিও চেয়ারম্যান ও সংশ্লিষ্টরা এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
সুত্রঃ জনকন্ঠ।
0 Comments