।। এস.এম.মনিরুল ইসলাম মনি ।।
করোনারভাইরাসের আঘাতে থমকে যাওয়া জনজীবনে সারা দেশে চলছে লকডাউন। লকডাউনের কারণে বিভিন্ন ধরনের যানবাহন ও মানুষের চলাচল সীমিত করা হয়েছে। বন্ধ করা হয়েছে পাড়ামহল্লা থেকে শুরু করে হাট-বাজারে দোকানপাট ও হোটেল-রেঁস্তোরা। সাধারণ দোকান থেকে শুরু করে হোটেল-রেঁস্তোরা ও বেকারী ব্যবসার সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে পোল্ট্রি ও ডিম ব্যবসায়ীদের।
দোকানে দোকানে মুরগি ও ডিম সরবরাহ করতে না পারায় দাম কমে গেছে মুরগি ও ডিমের। এসব বন্ধ থাকায় পোলট্রি ও ডিম ব্যবসায়ীরা পড়েছে বিপাকে। তবে পরিবহন সংকটের কারণে দাম বেড়েছে পোলট্রি খাদ্যের। পোলট্রি শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে সরকারের কাছে প্রণোদনার দাবি করছেন খামারিরা।
উত্তরবঙ্গের বৃহৎ পোল্ট্রি জোন হিসেবে পরিচিত পাবনা জেলায় করোনার প্রভাবে লোকশান গুনতে গুনতে বন্ধ হয়ে গেছে অনেক পোল্ট্রি খামার। দিনের পর দিন লোকশান গুনেও এখনো কিছু খামার সচল রেখেছেন জেলার খামারীরা।
এসব খামারে কেউ ব্রয়লার আবার কেউ লেয়ার পালন করছে। দেশের এই উৎকণ্ঠাময় পরিস্থিতিতে পোল্ট্রি খামারিরা পড়েছে মহাবিপদে। পোল্ট্রি খামার ব্যবসা ও প্রাণীজ প্রোটিনের উৎপাদন টিকিয়ে রাখতে সরকারের ভর্তুকি বা বিশেষ প্রণোদনার বিকল্প নেই বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
এ ছাড়া ব্যাংক বা বিভিন্ন সংস্থা থেকে যে সব খামারি ঋণ নিয়েছে তাদের রিসিডিউল বা পুনরায় ঋণ প্রদানের ব্যবস্থা করা। উৎপাদিত ডিমের দাম কমে যাওয়ায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি খামারিদের কপালে এখন দুশ্চিন্তার ভাঁজ পড়েছে।
জেলার সদর উপজেলার রানীগ্রামের পোল্ট্রি খামারি তরুন উদ্যোক্তা শুভ বলেন, তার খামারে দুই হাজার লেয়ার মুরগি রয়েছে। আগে এক বস্তা (৫০ কেজি) মুরগির খাদ্যের দাম ছিল এক হাজার ৬৫০ টাকা। এখন তা বেড়ে হয়েছে এক হাজার ৭০০ টাকা। আগে একশত ডিমের দাম ছিল ৬৮০-৭০০ টাকা। শনিবার তা বিক্রি হয়েছে ৫০০-৫৫০ টাকা। ডিমের দাম কম হওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছি। পোলট্রি শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে তিনি সরকারের কাছে ভর্তুকি দাবি করেন।
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে খামার পর্যায়ে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগী বিক্রি হচ্ছে ৬৫-৭০ টাকায়। এদিকে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগীর উৎপাদন খরচ প্রায় ১০০ টাকার উপরে। লোকশানের শিকার হয়ে খামার বন্ধ করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন খামারিরা। এভাবে চলতে থাকলে শীঘ্রই দেখা দিতে পারে প্রাণীজ প্রোটিনের ঘাটতি।
জেলা প্রাণী সম্পদ অফিসের হিসাব মতে, অন্যান্য জেলার চেয়ে পাবনায় খামারের সংখ্যা অনেক বেশি। সে মোতাবেক এই সংকটময় সময়ে এ অঞ্চলের খামারিদের জন্য বিশেষ প্রণোদনার ব্যবস্থা করলে লোকসানের মাত্রা সহনীয় পর্যায়ে থাকত এবং পোলট্রি শিল্পকে টিকিয়ে রাখা সম্ভব হত।
0 Comments