বিজ্ঞাপন

শিরোনাম

6/recent/ticker-posts-pabnatimes

মেঘনায় ট্রলার ডুবিতে নিখোঁজ পাবনার শ্রমিকদের বাড়িতে শোকের মাতম


পাবনা প্রতিনিধিঃ
মেঘনা নদীতে মাটি বোঝাই ট্রলার ডুবিতে নিখোঁজ ২০ শ্রমিকের মধ্যে ১৭ জনের বাড়িই পাবনায়।

মঙ্গলবার রাত সাড়ে তিনটায় চাঁদপুরের মতলব ও মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ার সীমান্তবর্তী কালিয়াপুর এলাকার মেঘনা নদীতে এ ট্রলার ডুবির ঘটনা ঘটে। 

একটি তেলবাহী ট্যাঙ্কারের ধাক্কায় ওই ট্রলারটি ডুবে যায় বলে ফিরে আসা শ্রমিকরা জানান।
এখনো নিখোঁজ শ্রমিকদের সন্ধান মেলেনি। উদ্ধার হয়নি ডুবে যাওয়া ট্রলারটিও। 
নিখোঁজ ২০ জনের মধ্যে ১৮ জনের পরিচয় মিলেছে। এর মধ্যে ১৭ জনের বাড়ি পাবনা জেলার ভাঙ্গুড়া উপজেলার খানমরিচ ইউনিয়নে।
পরিচয় পাওয়া শ্রমিকরা হলেন— পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার খানমরিচ ইউনিয়নের মুন্ডুমালা গ্রামের গোলাই প্রামাণিকের ছেলে সোলেমান হোসেন, জব্বার ফকিরের ছেলে আলিফ হোসেন ও মোস্তফা ফকির, গোলবার হোসেনের ছেলে নাজমুল হোসেন (১), আব্দুল মজিদের ছেলে জাহিদ হোসেন, নূর ইসলামের ছেলে মানিক হোসেন, ছায়দার আলীর ছেলে তুহিন হোসেন, আলতাব হোসেনের ছেলে নাজমুল হোসেন (২), লয়ান ফকিরের ছেলে রফিকুল ইসলাম, দাসমরিচ গ্রামের মোশারফ হোসেনের ছেলে ওমর আলী ও মান্নাফ আলী, তোজিম মোল্লার ছেলে মোশারফ হোসেন, আয়ান প্রামাণিকের ছেলে ইসমাইল হোসেন, সমাজ আলীর ছেলে রুহুল আমিন, মাদারবাড়িয়া গ্রামের আজগর আলীর ছেলে আজাদ হোসেন, চন্ডিপুর গ্রামের আমির খান, আব্দুল লতিফের ছেলে হাচেন আলী এবং  সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার গজাইল গ্রামের তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে রহমত আলী।
বেঁচে যাওয়া শ্রমিকদের মধ্যে পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার চন্ডিপুর গ্রামের হাশেম আলীর ছেলে মামুন আলী প্রামাণিক ও পাইকপাড়া গ্রামের আশরাফ মোল্লার ছেলে শাহ আলম জানান, ট্রলারের মাথার দিকে ছিলেন মামুন আর পেছনের দিকে ছিলেন শাহ আলমসহ বাকিরা। ট্রলার ডুবে যাওয়ার মুহূর্তে তারা ১৪ জন উঠে আসতে পারলেও অন্যরা পারেনি।
তারা বলেন, ওই সময় চারিদিকে অন্ধকারে কিছুই দেখা যাচ্ছিল না। ৩ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে আমরা ঠাণ্ডা পানির মধ্যে সাঁতরে ভেসে ছিলাম। মনে হচ্ছিল মৃত্যু খুব কাছে। পরিবারের কথা মনে পড়ছিল। আর ১০ মিনিট পানিতে থাকলে মারা যেতাম। মাটির ট্রলার নির্ধারিত সময়ের মধ্যে গন্তব্যে না পৌঁছার কারণে মালিক পক্ষ মোবাইলে ফোন দিয়ে বন্ধ পায়। সন্দেহ হলে তখন তারা আরেকটি ট্রলার নিয়ে এসে আমাদের উদ্ধার করে।
এদিকে, নিখোঁজের ২৪ ঘণ্টা পরেও স্বজনদের খোঁজ না পেয়ে পরিবারগুলোতে চলছে শোকের মাতম। তাদের আহাজারিতে খানমরিচ ইউনিয়নের বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে।
খানমরিচ ইউপি চেয়ারম্যান আসাদুর রহমান বলেন, নিখোঁজ শ্রমিকরা কাজের সন্ধানে মুন্সীগঞ্জ গিয়েছিল। বিনা মেঘে বজ্রপাতের মত উপার্জনের অবলম্বন স্বজনদের হারিয়ে যেন অকূল পাথরে পড়েছে তাদের পরিবার। একদিকে স্বজন হারানোর শোক অন্যদিকে অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ। তাদের সান্ত্বনা দেয়ার ভাষা আমার জানা নেই।
তিনি জানান, এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। তারা সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।
পাবনা জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিন জানান, বুধবার সকাল থেকে নিখোঁজ শ্রমিকদের সন্ধানে মুন্সিগঞ্জ ও চাঁদপুরে মেঘনা নদীতে অভিযান চলছে।
মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারুক আহম্মেদ জানান, কুয়াশার কারণে দুর্ঘটনার স্থান চিহ্নিত করতে সমস্যা হচ্ছিল। দুর্ঘটনা কবলিত ট্রলারটি শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। পুলিশ, কোস্টগার্ড ও ফায়ার সার্ভিস কাজ করছে।

Post a Comment

0 Comments